অনলাইন সীমান্তবাণী ডেস্ক : ভারতের প্রধানমন্ত্রী নরেন্দ্র মোদি শুক্রবার (১৬ডিসেম্বর) রাশিয়া-ইউক্রেন যুদ্ধ নিয়ে রাশিয়ার প্রেসিডেন্ট ভ্লাদিমির পুতিনের সঙ্গে ফোনে কথা বলেছেন। তিনি আবারও মনে করিয়ে দেন, শুধুমাত্র আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমেই ইউক্রেনের সংঘাতের সমাধান সম্ভব। ইন্ডিয়ান এক্সপ্রেসের এক প্রতিবেদনে এতথ্য জানানো হয়।
প্রতিবেদনে বলা হয়, গত সেপ্টেম্বর মাসে শাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশন (এসসিও) সম্মেলনে পুতিনকে বার্তা দিয়ে মোদি বলেছিলেন, ‘এই যুগ যুদ্ধের নয়।’ প্রকাশ্যে রাশিয়ার উদ্দেশে এই মন্তব্য করার জন্য মোদির প্রশংসা করেছিল পশ্চিমা দেশগুলো। যদিও এই বার্তাটিকে জনসাধারণের তিরস্কার হিসেবে দেখা হয়েছিল।
শোনা যাচ্ছে, এই ফোনালাপেও মোদি যুদ্ধ শেষ করার জন্য জোর দিয়েছেন। ক্রেমলিন নিজেদের বিবৃতিতে উল্লেখ করেছে, নরেন্দ্র মোদির অনুরোধে ভ্লাদিমির পুতিন ইউক্রেন নিয়ে রাশিয়ার মৌলিক বিশ্লেষণ প্রকাশ করেন।
দুই রাষ্ট্রপ্রধান এসসিও শীর্ষ সম্মেলনে মিলিত হয়েছিলেন। সেই কথোপকথন এখন আরও এগিয়ে নেওয়া হয়েছে। দুই দেশের সম্পর্কের বিভিন্ন দিক খতিয়ে দেখা হয়েছে। মোদি ও পুতিন পারস্পরিক সহযোগিতা বিশেষ করে জ্বালানি, বাণিজ্য, বিনিয়োগ, প্রতিরক্ষা ও নিরাপত্তা বিষয়ে বিস্তারিত আলোচনা করেন।
এবার ‘জি-২০’ সম্মেলনের সভাপতিত্ব করছে ভারত। এ নিয়েও উভয় পক্ষের মধ্যে কথা হয়েছে। প্রধানমন্ত্রীর দফতরের প্রেস বিবৃতিতে জানানো হয়েছে, ভারতের নেতৃত্বে সাংহাই কর্পোরেশন অর্গানাইজেশনে দুই দেশ একসঙ্গে কাজ করার দিকে তাকিয়ে আছেন পুতিন। দুই রাষ্ট্রপ্রধান একে অপরের সঙ্গে নিয়মিত যোগাযোগ রাখার প্রতিশ্রুতিও দিয়েছেন।
ইউক্রেনের যুদ্ধ নিয়ে দিল্লি দীর্ঘদিন ধরে নীরব। এ নিয়ে পশ্চিমা দেশগুলো বারবার তাদের উত্তাপ প্রকাশ করেছে। এসসিও সম্মেলনে প্রথমবারের মতো রাশিয়াকে বার্তা দিলেন মোদি। মোদির সে বক্তব্য ‘জি-২০’ এর ঘোষণায় স্থান পেয়েছে। আজ আবারও দুই পক্ষ যুদ্ধ নিয়ে কথা বলেছে।
রাশিয়ার দাবি, আমেরিকা ও ইউরোপ ভারতকে প্রভাবিত করতে চায়। তবে এবারের কথার পরে ভারতে নিযুক্ত রুশ রাষ্ট্রদূত ডেনিস আলিপোভ জানিয়েছেন, ইউক্রেন সংঘাতে দিল্লির অবস্থান একই রয়ে গেছে। ইউরোপ শুধু নিজেদের সমস্যার কথা বলে, অন্যের কথা চিন্তা করে না।
গত সপ্তাহে ভারতের বিদেশমন্ত্রী এস জয়শঙ্কর জানান, ভারত ও প্রধানমন্ত্রী মোদি ‘পুরো বিশ্বের কণ্ঠস্বর’ হয়ে উঠেছেন। বিশেষ করে উন্নয়নশীল দেশগুলো। তিনি আলোচনা ও কূটনীতির মাধ্যমে যত দ্রুত সম্ভব যুদ্ধ বন্ধ করার চেষ্টা করবেন।
ইউক্রেন অবশ্য ভারতের অবস্থানে সন্তুষ্ট নয়। ইউক্রেনের বিদেশমন্ত্রী দিমিত্রি কুলেবা গত সপ্তাহে একটি ভারতীয় সংবাদ সংস্থাকে দেওয়া সাক্ষাৎকারে অভিযোগ করেছিলেন, ভারত সস্তায় রাশিয়ার তেল কিনছে, আর রুশ আগ্রাসন ইউক্রেনে প্রতিদিন মানুষ হত্যা করছে।
জবাবে জয়শঙ্কর জানান, ইউরোপ রাশিয়ার কাছ থেকে যা ক্রয় করে তার একটি ছোট অংশ ভারত কেনে।
Leave a Reply